ফিংড়ী ইউপি সদস্য মাহফুজের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরায় এক প্রতারক ইউপি সদস্যের প্রতারণার সীকার হয়ে এলাকার নিরীহ হত-দরিদ্র সাধারণ মানুষ সর্বশান্ত হয়ে পড়ছেন। ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ। প্রতারক ইউপি সদস্যের নাম মাহফুজ সরদার। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের মৃত সৈয়দ আলী সরদারের ছেলে ও ১৪নং ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য।
ফিংড়ী ইউপি সদস্য মাহফুজ সরদারের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে জমি দখল, ভূমিহীন পরিবার কে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া, সরকারি চাল চুরি, চাকরী দেওয়ার নামে টাকা গ্রহণ, সমিতি থেকে সহজ কিস্তিতে লোণ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অগ্রিম টাকা গ্রহণ করে নিরীহ সহজ-সরল মানুষদের বোকা বানিয়ে হাজার হাজার টাকা আত্মসাত করা সহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ওই ইউপি সদস্য মাহফুজ সরদারের বিরুদ্ধে। তার অত্যাচারে ফিংড়ী এলাকার জনগণ রিতিমত অতিষ্ঠ।
সরেজমিনে ঘুরে জানাগেছে, মাহফুজ মেম্বর ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভ করার পর ৮নং ওয়ার্ড গোবরদাড়ি গ্রামের মৃত. নুর ইসলামের ছেলে শামিম হোসেনের ক্রতকৃত ১০কাঠা জমি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অবৈধ ভাবে দখলে নিয়েছেন মাহফুজ সরদার।
মাহফুজ মেম্বর গোবরদাড়ি গ্রামের মৃত. ইনতাজ গাজীর প্রতিবন্ধী ছেলে আলাউদ্দীন ও ছেলের বৌ প্রতিবন্ধী শাহনাজ বেগম কে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিবন্ধী আলাউদ্দীনের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ করে তাদের ঘর না দিয়ে ওই টাকা আত্মসাত করেন।
প্রতিবন্ধী আলাউদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, আমি গরিব মানুষ এক হাত দিয়ে ভ্যান চালিয়ে খাই। আমাকে মাহফুজ মেম্বর ঘর দেওয়ার নাম করে ৩০ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু মেম্বর ঘর দিতে না পারলে আমি আমার টাকা ফেরত চাইলে আমাকে গালি-গালাজ করে। আমি আমার টাকা ফেরত পেতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং প্রধানমন্ত্রী’র সহযোগিতা চাই।
গোবরদাড়ি গ্রামের ডা. হাফিজের স্ত্রী সাবেক মহিলা মেম্বর আনজুআরা কে সমিতি থেকে তিন টি গরু ক্রয় করে দেওয়ার নাম করে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম ৯৫ হাজার টাকা নিয়ে সে টাকাও আত্মসাত করার অভিযোগ রয়েছে।
ফিংড়ী গ্রামের দুস্ত-অসহায় পাচু মালির মেয়ে নবীনা খাতুনের জামাতার সাথে পারিবারিক বিরোধ মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে ৫ হাজার টাকা নেন মেম্বর মাহফুজ সরদার। নবীনা খাতুন স্থানীয় লোকজন দিয়ে মাহফুজ মেম্বর কে চাপ সৃষ্টি করলে নবীনা খাতুনের ৩ হাজার টাকা ফেরত দেন প্রতারক মেম্বর।
মেম্বর মাহফুজ সরদার ২০১১/১২ সালে সরকারি চাল চুরির করে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতার হাতে ধরা পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে থানা পুলিশে সোপর্দ করে। সরকারি চাল চুরির অপরাধে মাহফুজ মেম্বর কে হাজতবাস করতে হয়।
সূত্রে জানাগেছে, ফিংড়ী ইউনিয়নে মিতালী সংস্থা (রেজি: নং-৬৬৩) নামক একটি সমিতি রয়েছে। ওই সমিতি থেকে হাঁস, মুরগী, গরু, ছাগল পালন, দর্জী প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন প্রদান সহ বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষুদ্র ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে শত শত দরিদ্র নারীদের কাছ থেকে ৩হাজার থেকে শুরু করে ৫/৬ হাজার করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মাহফুজ মেম্বরের বিরুদ্ধে।
সূত্র আরো জানায়, ধূর্ত ও প্রতারক মাহফুজ মেম্বরের প্রতারণার সীকার হয়েছেন এক পুলিশ সদস্য। তার কবল থেকে এক পুলিশ সদস্যও রেহাই পাননি। প্রতারণার সীকার পুলিশ কং এর নাম আব্দুল আলিম। মাহফুজ মেম্বর এক সহযোগি বাবলু সরদারের মাধ্যমে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থেকে বদলী করে সদর থানায় এনে দেওয়ার নামের পুলিশ কং আব্দুল আলিমের কাছ থেকে ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা নেয় ওই প্রতারক চক্র। বদলী করাতে না পারায় পুলিশ কং আব্দুল আলিম স্থানীয় প্রভাবশালিদের সহযোগিতায় মিমাংসায় বসেন। পরে পুলিশ সদস্য কে ১৪ হাজার টাকা ফেরত দেয় তারা।